নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) হাতিরঝিল থানা শাখার বিদ্যমান কমিটি উপেক্ষা করে হঠাৎ নতুন কমিটি ঘোষণায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে।
সূত্র জানায়,২০২২ সালের মার্চ মাসে ২১ সদস্য বিশিষ্ট হাতিরঝিল থানা জাসাস আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। এতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান মাসুম বিল্লাহ রাকিব এবং সদস্য সচিব হন মেহেদী হাসান মুকুল। কমিটি ঘোষণার পর থেকে তারা ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মসূচিতে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন।
বিশেষ করে গত জুলাই মাসের গণআন্দোলনে রামপুরা এলাকায় তারা অগ্রণী ভূমিকা রাখেন,যেখানে বহু নেতাকর্মী আহত হোন এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এই কমিটির নেতারা দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড জোরদার ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন পুনরুজ্জীবিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তবে বর্তমানে কার্যকর থাকা কমিটিকে উপেক্ষা করে নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতে মহানগর উত্তর জাসাসের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন আনু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হঠাৎ করে একটি নতুন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন এবং তথাকথিত কর্মী সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেন যা নীতি নির্ধারনীর বহিঃভূত ।
এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা। তারা অভিযোগ করেন,নতুন ঘোষিত কমিটির অনেক সদস্যই ৫ আগস্টের পর বিএনপিতে যোগদান করেছেন, যাদের সংগঠনের আন্দোলন-সংগ্রামে কোনো সক্রিয় ভূমিকা ছিল না।
এছাড়া আনোয়ার হোসেন আনুর বিরুদ্ধে “পদ বাণিজ্য” করারও অভিযোগ উঠেছে।ত্যাগী নেতারা অভিযোগ করে বলেন,যে সংগঠন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে গঠিত,সেখানে ত্যাগীদের উপেক্ষা করে টাকার বিনিময়ে পদ বণ্টন জাসাসের চেতনা ও গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।”
হাতিরঝিল থানা জাসাসের সদস্য সচিব মেহেদী হাসান মুকুল বলেন,
আমাদের কমিটি এখনো কার্যকর। আমরা নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। কোনো আলোচনা বা অনুমোদন ছাড়াই নতুন কমিটি ঘোষণা করা গঠনতন্ত্রবিরোধী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল। আমরা বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছি।”
জাসাসের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো থানা বা ইউনিট কমিটি বিলুপ্ত বা পুনর্গঠন করতে হলে কেন্দ্রের অনুমোদন নিতে হয়। সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন কমিটি ঘোষণা করা সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থী।”
এ বিষয়ে তারা কেন্দ্রীয় জাসাসের সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
জাসাসের তৃণমূল নেতাদের অভিমত,“ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীদের বাদ দিয়ে অরাজনৈতিক বা সুযোগসন্ধানী ব্যক্তিদের দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করলে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে এবং মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করবে বলে জানায়।
সংগঠনের গঠনতন্ত্র অবমাননা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জাসাসের কেন্দ্রীয় দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন বহালকৃত কমিটির নেতারা।
Leave a Reply