নিজস্ব প্রতিবেদক:
এক সময়ের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এখন অনিয়ম ও প্রশাসনিক অদক্ষতায় ভারাক্রান্ত। এক দশক আগেও দেশের শীর্ষ ২০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান পাওয়া এই প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ফলাফল ক্রমশ নিম্নমুখী। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি পরীক্ষায় বিদ্যালয়টির ২৪ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে, যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বাধিক ব্যর্থতার নজির।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হালিমুজ্জামান প্রতিবেদককে জানায়,বিদ্যালয়ের নিয়োগ না থাকায় সকল পদেই ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত),সহকারী প্রধান শিক্ষক (প্রভাতী শাখা-ভারপ্রাপ্ত), সহকারী প্রধান শিক্ষক (দিবা শাখা-ভারপ্রাপ্ত) সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ ভারপ্রাপ্তদের হাতে পরিচালিত হচ্ছে। নতুন ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন না নিয়েও পূর্বের কমিটি বহাল রয়েছে, যা বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোয় অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।
সূত্র জানা যায়, বিদ্যালয়ের ২১তম ম্যানেজিং কমিটির ০৮ নং সভার তৎকালীন চেয়ারম্যান জনাব মো. সিরাজুল ইসলামের সিদ্ধান্ত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের এইচআরডি-২ এর যুগ্ম পরিচালক মো. মাসুদ রানার স্বাক্ষরিত ২৫/০৮/২০২৫ তারিখের চিঠি উপেক্ষা করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ফ্যাসিবাদী সরকারের তোষামোদে নিয়োজিত কিছু শিক্ষক ও কর্মচারীকে আর্থিক সুবিধা দিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পরিকল্পিতভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছেন চারু-কারু বিভাগের শিক্ষক জাকির হোসেন এবং হিসাব রক্ষক বজলুর রহমান।
উল্লেখ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা পরিদর্শন ও হিসাব নিরীক্ষক অধিদপ্তরের ১৯/০৮/২০০৭ তারিখের এক অডিট প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল যে জাকির হোসেনের চাকরি বিধি-সম্মত নয়। পাশাপাশি প্রাথমিক শাখার শিক্ষকদের প্রাথমিক বেতন কাঠামো অনুযায়ী বেতন প্রদানের সুপারিশও করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এসব নির্দেশনা মানা হয়নি।
ফলে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শিক্ষকদের মধ্যে বিভক্তি ও বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শিক্ষার্থীদের পাঠদানে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ও মান উভয়ই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের প্রতি শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের দাবি—অবিলম্বে অনিয়ম রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বিদ্যালয় পরিচালনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
Leave a Reply