নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানির সাথে সরকারের বৈঠক আয়োজন আন্তর্জাতিক চুক্তি এফসিটিসি (Framework Convention on Tobacco Control) এর আর্টিকেল ৫.৩ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা।
সরকারের পক্ষ থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে অধিকতর শক্তিশালী করার উদ্যোগের প্রশংসা জানিয়ে তারা বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের এই উদ্যোগ ব্যাহত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। নিজেদের “অংশীজন” দাবি করে তারা আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় মতামত দিতে চাইছে, যা জনস্বাস্থ্যবিরোধী এবং আন্তর্জাতিক চুক্তির পরিপন্থী।
বাংলাদেশ টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যাডভোকেটস (BTCA) ও বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (BATA)-এর যৌথ উদ্যোগে আজ সোমবার বিকেল ৩টায় রাজধানীতে “আইন নিয়ে তামাক কোম্পানির সাথে কোনো আলোচনা নয়” প্রতিপাদ্যে এক প্রতিবাদ কর্মসূচি ও ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন আহমেদ। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যাডভোকেটস, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, এইড ফাউন্ডেশন, ডাস, নাটাব, মানস, টিসিআরসি, নারী মৈত্রী, আইডাব্লিউবি, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, এবং বিএমএসএস, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধিসহ শিক্ষার্থীবৃন্দ।
প্রতিবাদ কর্মসূচি শেষে ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্পেইনটি জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে শুরু হয়ে এনবিআর, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, প্রেসক্লাব এলাকা প্রদক্ষিণ করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দ্রুত সংশোধনের দাবিতে প্রচারণা চালানো হয়।
বক্তারা বলেন,তামাক কোম্পানি সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টার অংশীজন হতে পারে না। সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন, আর তামাক কোম্পানির লক্ষ্য ক্ষতিকর পণ্যের বিপণনের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন— যা পরস্পরবিরোধী।”
তারা আরও বলেন,তামাক কোম্পানির সাথে নীতিনির্ধারণে কোনো পর্যায়ে মতামত গ্রহণ করা যৌক্তিক নয়। এটি কেবল আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন নয়, বরং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।”
বক্তারা অভিযোগ করেন, অতীতে তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপেই কোম্পানিগুলো নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। এটি এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ এর বারংবার লঙ্ঘন।
পরিশেষে বক্তারা বলেন,তামাক কোম্পানিগুলো মূলত কিশোর ও তরুণদের লক্ষ্য করে বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা করে। তাই আগামী প্রজন্মকে তামাকের সর্বনাশা ছোবল থেকে রক্ষা করতে আইনটি দ্রুত সংশোধন ও শক্তিশালী করা জরুরি।”
তারা আরও জানান, সরকারের ৩৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ ইতোমধ্যে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে ‘সব নীতিতে স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য’ নীতির বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত নীতি প্রণয়ন ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তারা।
Leave a Reply