নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (গাউক) এর রেখাকার হায়দার আলী ও এস্টেট পরিদর্শক মামুন ভূঁঈয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ অর্থের বিনিময়ে গ্রাহক সেবা প্রদানের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হওয়া ইমারত পরিদর্শক মুরাদ আলীর দুর্নীতির অন্যতম হোতা হিসেবে পরিচিত এই হায়দার আলী ও মামুন ভূঁঈয়া। অভিযোগ রয়েছে,সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইলের কাজ এগিয়ে নেয়না তারা।
সূত্র জানাযায়, হায়দার আলী নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ। এই চক্রে জড়িত রয়েছে এস্টেট পরিদর্শক মোঃ মামুন ভূঁইয়া, কানুনগো মোাঃ ইকবাল হোসেন, আউট সোর্সিং কর্মচারী রেজাউল এবং দালাল মাহী।
এস্টেট পরিদর্শকের পদে দায়িত্ব না থাকলেও মামুন ভূঁইয়া বর্তমানে সচিবের পিএস হিসেবে কাজ করছেন। তার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, তিনি উত্তরা ৭নম্বর সেক্টরে ২,৫০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট এবং পূর্বাচলে একটি প্লটের মালিক।
ইতিপূর্বে গাউকের দুর্নীতির খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলেও কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। ফলে এসব কর্মকর্তারা নিজেদের ধরাছোঁয়ার বাইরে মনে করছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ
ভুক্তভোগী এক ব্যবসায়ী বলেন,
“একটি অনুমোদিত নকশা পেতে হলে কয়েক দফায় টাকা দিতে হয়। নির্ধারিত ফি দেওয়ার পরও কর্মকর্তাদের পকেটে চাহিদা মত ঘুষ না পাওয়া পর্যন্ত ফাইল নড়েই না। সাধারণ মানুষের পক্ষে এসব অন্যায় সহ্য করা সম্ভব নয়।”
সেবা প্রত্যাশীদের অভিমত
আরেকজন সেবাপ্রার্থী জানান,
“গাউকের অফিসে গেলে মনে হয় যেন দালালদের দখলে। কর্মকর্তারা তাদের মাধ্যমেই কাজ করান। সাধারণ গ্রাহক সরাসরি সেবা পায় না।”
বিশেষজ্ঞদের মতামত
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আব্দুল কাদের মনে করেন,
“গাউকের দুর্নীতি মূলত জবাবদিহিতার অভাবে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কিংবা উচ্চ পর্যায়ের কোনো তদারকি ব্যবস্থা সক্রিয় না থাকায় কর্মকর্তারা অবাধে অনিয়ম করছেন। জরুরি ভিত্তিতে স্বাধীন মনিটরিং টিম নিয়োগ করা জরুরি।
দুদক মতামত
অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন
“এই ধরণের দফতরে হঠাৎ করে অভিযান চালানো উচিত। কেবল অভিযোগ গ্রহণ নয়, দৃশ্যমান শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে দুর্নীতি অনেকটা কমে যাবে।”
সমাধানের দাবি
ভুক্তভোগীরা মনে করছেন, গাউকের লাগামহীন দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার পেতে দিন গুনছে।
Leave a Reply