ডিএস নিউজঃ রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরের ৪৭ রোডের ২৫ নম্বর আবাসিক ভবনের ডি-৪ ফ্ল্যাটের অল দ্যা বেস্ট স্পা সেন্টারে অভিযান চালানোর ঘটনায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। বুধবার রাতে ডিএনসিসির প্রসিকিউশন অফিসার (অঞ্চল-৩) আব্দুস সালাম বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- স্পা সেন্টারের মালিক হাসানুজ্জামান ওরফে হাসান, তার স্ত্রী ও স্পা সেন্টারের ম্যানেজার সাইনুর আক্তার পায়েল ও ফ্ল্যাটের মালিক এটিএম মাহাবুবুল আলম। এছাড়াও ডিএনসিসির অভিযানে আটক সাত নারীর বিরুদ্ধে দেহ ব্যবসা করার অভিযোগে ডিএমপির অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রসিকিউশন ইউনিটের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার স্পা সেন্টারে অভিযান চালায় ডিএনসিসির ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে ফারজানা আক্তার (১৯) নামে এক নারী নিহত হয়। এ ঘটনায় আরও এক নারী গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা গেছে, গুলশান ও বনানীতে প্রায় ৪০টি স্পা সেন্টার রয়েছে যার অন্তরালে দেহ ব্যবসা চলে। রিয়া ও নয়ন পরিচালিত ডায়মন্ড স্পা সেন্টার গুলশান দুই এর প্লাডিয়াম মার্কেট ২য় তলায় অবস্থিত। কতিপয় পুলিশ ও ডিএনসিসির প্রসিকিউশন অফিসার আব্দুস সালামকে ম্যানেজ করে চলে এসব স্পা। হাসান র্দীঘদিন ধরে স্পা ব্যবসার আড়ালে দেহ ব্যবসা করে আসছে।
কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী সুমন ও মিঠুসহ একাধিক চক্র গুলশান এলাকায় মাদকের সাথে নারী বানিজ্য করে যাচ্ছে তারা জানায় স্পা সেন্টার চালাতে ডিএনসিসির সালাম স্যারকে মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়,এমনকি তিনি নিজেও গুলশান দুইএর এইচ হোটেলে রত্নার সাথে যুক্ত হয়ে স্পার ব্যবসা করে যাচ্ছেন,অন্যদিকে তার চাঁদাবাজি অব্যাহত রয়েছে। তাকে চাঁদা না দিলে অভিযান চালানো হয়।
ডিএনসিসির প্রসিকিউশন অফিসার আব্দুস সালামকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
গুলশান থানার এসআই হাসিব বলেন, অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে অনৈতিক উপায়ে লাভবান হওয়ার জন্য পতিতালয় চালাচ্ছিল। মামলাটি আমরা তদন্ত করছি।
স্পা-সেন্টার থেকে লাফিয়ে পড়ে নিহত ফারজানা আক্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসিব বলেন, ফারজানা আক্তারের মৃত্যুর বিষয়টি অপমৃত্যু হিসেবে রেজিস্টার হয়েছে। আমরা এখন তদন্ত করে দেখব আসলে তার মৃত্যুর কারণ কী। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ইশরাত নামে এক নারী স্পা সেন্টারটির ফ্ল্যাটের মালিক বলে জানা গেছে। কিন্তু ডিএনসিসির অভিযোগে ফ্ল্যাটটির মালিক এটিএম মাহাবুবুল আলম বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফ্ল্যাটটির মালিক আরও কেউ আছেন কি না বা ফ্ল্যাটের মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে কি না জানার চেষ্টা করছি।
অনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে স্পার ব্যবসা পরিচালিত হয়ে আসছে কয়েকদিন পরপর অভিযান চালানোয় জীবন নাশের ঘটনা ঘটছে। কয়েকদিন পূর্বে বনানীর আউয়াল টাওয়ারের নবম তলায় অবস্থিত একটি স্পা সেন্টারে অভিযান চালালে এক প্রকৌশলী নিহত হয়। গুলশানের ১৩০ নং রোডে বাহার ও হাসানের স্পা সেন্টারে অভিযান চালালে দুই তরুনী লাফিয়ে পড়ে সেই ঘটনায় তমা ২২ নামে এক তরুণী নিহত হয়।
এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি কেউ আর দেখতে চায়না। হয় এসব স্পা সেন্টার একেবারে উঠিয়ে দেয়া হোক নয়তো কোনো নীতিমালার আওতায় আনা হোক কারন ডিপ্লোমেটিক জোন খ্যাতো গুলশান বনানী যেখানে বিদেশি নাগরিকের বসবাস সেদিকে লক্ষ্য রেখে নিয়মতান্ত্রিক স্পা সেন্টার পরিচালনার দাবী এলাকাবাসীর।
ডিএস নিউজ/Uzzal
Leave a Reply