উৎপল ঘোষ(ক্রাইম রিপোর্টার)
যশোর মনিরামপুরে কুমারঘাটা পল্লী এলাকা থেকে পঁচিশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা গোপালগঞ্জ টংগীপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা এলাকার মৃত বারিক সর্দারের পুত্র মহাপ্রতারক আমিনুল ইসলাম সর্দার (৪৮)।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে,যশোর মনিরামপুর উপজেলার সীমান্তে ১৭ নং মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমারঘাটা গ্রামের সহজ-সরল হত দরিদ্র আফছার আলীর ছেলে নজরল ইসলাম(৪২) এর কাছ থেকে গরুর ফার্ম ও মাছের খাবারের ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে দশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।
এলাকার চিহ্নিত সিন্ডিকেটের হোতা রফিকুল ফকিরের ছেলে রোস্তম ফকিরের (৩০) মাধ্যমে।গরুর ফার্ম ও মাছের খাবারের ব্যবসার অঙ্গীকার সমাপ্ত হলে দুই প্রতারক কিছু দিন পর ভিন্ন কৌশলের জালে ফেলে নতুন চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে আরও ধারাবাহিকভাবে পনের লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় ২০১৯ সালে। মোট পঁচিশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সর্বশান্ত করেছে নজরুল পরিবারকে। নজরুল পরিবারের সাতজন লোক নিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। এনজিওর দুই লক্ষ টাকার ঋণ,ধার করে নেওয়া অর্থ,গোয়ালের তিনটি গরু, জীবন -জীবিকার একমাত্র সম্বল ৮৪ শতাংশ ধানী জমি ও বসত ভিটার গাছ বিক্রি করা অর্থ নিয়ে দুই প্রতারক এখন উধাও।
সহায় সম্বল সবকিছু হারিয়ে এখন দুই শতক বসত ভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই।ভিকটিম নজরুল পাগলের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন এলাকায়। ছেলে-মেয়ের পড়াশুনা প্রায় বন্ধের পথে। বৃদ্ধ পিতা-মাতা সহ নজরুলের পরিবার অনাহারে দিন পার করছেন বলে জানাগেছে।
সরেজমিনে গেলে বেরিয়ে আসে অনেক অজানা তথ্য।গোপালগঞ্জ টংগীপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গার মৃত বারিক সর্দারের পুত্র আমিনুল ইসলাম সর্দারের রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। যার হোতা যশোর মনিরামপুর উপজেলার কুমোরঘাটা গ্রামের রফিকুল ফকিরের ছেলে রোস্তম আলী ফকির (৩২) ।এলাকার অনেকেই বলেছেন,নজরুলসহ আরও দু’টি পরিবার আজ পথের ফকির ও সর্বশান্ত।
মনিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমোরঘাটা গ্রামের নজরুলের বাড়িতে পৌঁছালে পিতা, মাতা,স্ত্রী সন্তানেরা সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে প্রতিবেদককে বলেন, আমরা বুঝতে পারিনি আমাদের পরিবারের মধ্যে প্রবেশ করে দুই মহাপ্রতারক এত বড় ক্ষতি করে আমাদের সর্বশান্ত করে পালিয়ে যাবেন। এখন আমাদের মৃত্যু ছাড়া আর কোন উপায় নেই। ছেলে মেয়ে পিতা-মাতাকে নিয়ে কিভাবে জীবন কাটাবো জানিনা। প্রতারক আমিনুল সর্দার নিজের ফেসবুক আইডিতে আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতা,মন্ত্রী ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ছবি দেখিয়ে নিজের অবস্থান করে প্রতারনার করে যাচ্ছে। সে ভুক্তভোগী পরিবারকে উপকারের প্রতিশ্রুতি দেন এনএস আই,পুলিশ কনষ্টেবল ও এ্যসেনসিয়াল কোম্পানি (ড্রাগস) পদে চাকুরি দিয়ে দিবে বলে পনের লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। দুই মহাপ্রতারকের একাধিক মোবাইলের ছিম রয়েছে।যা বর্তমানে সবগুলোই বন্ধ। নিরুপায় হয়ে অবশেষে প্রতারক আমিনুলের বিরুদ্ধে যশোর ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন পরিবারটি। যার নং-CR-৪৪০/২০২২ খ্রি:।তারিখ-১৪/০৬/২০২২ইং(চলমান)
এলাকার সচেতন মহল জানায় এত বড় ক্ষতি তিনটি পরিবারের মেনে নেওয়া যায় না।দেশরত্ন মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি অবিলম্বে দুই প্রতারককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থাসহ তিনটি পরিবারের অর্থ যাতে ফেরত পায় এবং স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে সেই দাবী এখন মনিরামপুরবাসীর। (চলবে)
Leave a Reply