নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সাভারে জমি দখল, জাল দলিল ও অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা সহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত চক্রের হোতা হিসেবে স্থানীয় ভাবে পরিচিত হয়েছেন দুই ব্যক্তি— মেহেদী হাসান ও সুরুজ্জামান। অভিযোগ রয়েছে,তাদের নেপথ্যে রয়েছেন সাভার-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সালাউদ্দিন বাবু।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মেহেদী হাসান সাভার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক এবং নিজেকে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন। তবে তিনি নির্বাচিত নন বল এলাকা সুত্রে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জোরপূর্বক পদটি দখল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
২০২৪ সালের নির্বাচনের দিনে তার সহযোগী সুরুজ্জামান এর সহায়তায় একদল সন্ত্রাসী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে হামলা চালিয়ে নির্বাচন পণ্ড করে দেয় এবং ভোট ছাড়াই নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন কথিত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান।
নুরুজ্জামান এর দখলীয় সম্পত্তি
স্থানীয় দলিল লেখকরা অভিযোগ করেছেন। এছাড়া মেহেদী হাসান কম দামে জাল দলিল ও ভেজাল জমি ক্রয়-বিক্রয় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি তিনি ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক প্রিন্সিপালকে সরকারি জমি কেনা দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করাতে গেলে সাব-রেজিস্টার তা অস্বীকার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি ওই কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সরানোর হুমকি দেন ।
এছাড়া দেওগা এলাকার ১২ শতাংশ জমি নিয়ে স্থানীয় মতিউর রহমানের সাথে তার মামলা চলছে এবং আরও একাধিক বিতর্কিত সম্পত্তি রয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে সুরুজ্জামান সাভার পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে পৌর যুবদলের সভাপতি পদপ্রার্থী। স্থানীয় সূত্রের দাবি, তিনি সুদের ব্যবসা ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। তার ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন দুই সহযোগী— মাহবুব ও জাকির।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে সাভার থানায় মামলা বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জনের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি রাজাবাড়ি এলাকার একটি অটোরিকশা কারখানা থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে।
এছাড়া সাভারের বিভিন্ন এলাকায় খাল ও সরকারি জমি দখলের মাধ্যমে ভেজাল জমি বিক্রির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বক্কর জানিয়েছেন, খালের জমি দখল সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত চলছে।
দখলীয় সম্পত্তি
স্থানীয়রা দাবি করেছেন, মেহেদী হাসান ও সুরুজ্জামান দুজনেই নিজেদেরকে সাবেক এমপি ডা. সালাউদ্দিন বাবুর ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচয় দেন এবং তার নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তার করেন। এ বিষয়ে সাবেক এমপির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনে সাড়া দেননি।
তবে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে, ডা.সালাউদ্দিন বাবু নিজ দলের কিছু কর্মীর মাধ্যমে এদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং গণমাধ্যমে খবর প্রকাশে বাধা দিচ্ছেন।
সাভারবাসীর প্রশ্ন?এমন ভূমিদস্যু ও অপকর্মে জড়িত ব্যক্তিদের পক্ষে কেন সাবেক জনপ্রতিনিধি অবস্থান নিচ্ছেন? এতে করে আগামী নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অতিসত্বর এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
(চলবে…)
Leave a Reply