সিরিয়ার ডি-ফ্যাক্টো নেতা আহমেদ আল-শারআ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে পৌঁছেছেন। নতুন সিরিয়ান প্রশাসনের ঘোষণায় জানানো হয়েছে, এই চুক্তি অনুযায়ী সব বিদ্রোহী গোষ্ঠী বিলুপ্ত হবে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একীভূত হবে।
এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আল-শারআ এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নেতাদের মধ্যে আলোচনা শেষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় কুর্দি নেতৃত্বাধীন ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এই চুক্তির আওতায় নেই।
আসাদের পতনের পর নতুন সম্ভাবনা
গত ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার বিরোধী যোদ্ধারা দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর ফলে প্রায় ১৩ বছর পর প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। এই ঐতিহাসিক পরিবর্তনের ফলে সিরিয়ার নতুন শাসকেরা একটি তিন মাসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছেন।
এই চুক্তিকে ‘সিরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। আল-জাজিরার প্রতিবেদক রেসুল সেরদার জানান, ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের সময় ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে লড়াই করা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো একত্রিত হওয়া ছিল বড় এক চ্যালেঞ্জ।
নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
নতুন সরকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিদ্রোহী নেতা মুরহাফ আবু কাসরা। আহমেদ আল-শারআ বলেছেন, দেশের সব অস্ত্র রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। তিনি আরও জানান, তার সরকারের লক্ষ্য প্রতিশোধ না নেওয়া এবং কোনো ধর্মীয় সংখ্যালঘুকে দমন না করা। তার মূল লক্ষ্য দেশের পুনর্গঠন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে মনোনিবেশ করা।
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান
কাতার সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের অংশ হিসেবে কাতারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল দামেস্ক সফর করেছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণ এখন আর নেই। সাবেক শাসকের অপরাধের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, যা আর প্রাসঙ্গিক নয়।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর এই চুক্তি এবং নতুন নেতৃত্ব সিরিয়ার ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
Leave a Reply