এসএম উজ্জ্বল হোসেনঃ
হোটেল ব্যবসায় ভ্যাট ফাকিঁর শির্ষে খলিল মিয়া। কসাই থেকে হোটেল ব্যবসায়ী, বর্তমান তিনটি প্রতিষ্ঠানের মালিক খলিল মিয়া। মিরপুর ও বনশ্রীতে রয়েছে একই নামে দুটি প্রতিষ্ঠান বিফ হোটেল অন্যটি মতিঝিলের হিরাঝিল হোটেলের পিছনে অবস্থিত খলিল হোটেল নামক প্রতিষ্ঠান। এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রয়েছে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ।
বিপুল অঙ্কের ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার কারণে কসাই খলিলুর রহমানের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মিরপুর শাখার বিরুদ্ধে ৫লাখ ২০হাজার টাকার ভ্যাট ফাঁকির জরিমানা ও মামলা করেছে ঢাকা পশ্চিম কমিশনারেটের রাজস্ব অফিসার। এছাড়া আরো দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রয়েছে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ। কসাই খলিলের উত্তর শাহজানপুরে রয়েছে গরুর মাংসের দোকান। ওই দোকান থেকেই গরুর মাংস সরবরাহ করেন খলিল, মতিঝিলের খলিল হোটেল সহ বনশ্রী এবং মিরপুর দারুসসালাম রোডের বিপ হোটেল নামক দুটি প্রতিষ্ঠানে রান্না করা গরুর মাংস বিক্রি করে। খলিল মিয়ার বড় ছেলে সাজ্জাদ বনশ্রী ও মিরপুরের বীফ হোটেল দুটি পরিচালনা করেন।
কসাই খলিলের বিরুদ্ধে উত্তর শাহজাহানপুর এলাকার ব্যস্ততম রাস্তার ওপর উন্মুক্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গরু জবাই করে মাংস কাটা এবং বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও মাংস ব্যবসায় তার বিরুদ্ধে ওজন মাপের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
শাহআলী সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা দুর্নীতির সন্ধানকে জানান,কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের সুবিধা নিয়ে মিরপুরে অবস্থিত বিফ হোটেলটি বড় অঙ্কের কর ফাঁকি দিয়েছিলো, যে কারনে খলিল মিয়ার প্রতিষ্ঠানে আমাদের নজরদারী রয়েছে।
মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডের মল্লিক টাওয়ারে বীফ হোটেল ।
নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান গুলোর ভ্যাট প্রদানের যাবতীয় বিষয় কেন্দ্রীয়ভাবে নিবন্ধিত কর অঞ্চল রাজস্ব কর্মকর্তা ভ্যাট প্রদানের যাবতীয় তথ্য নিরীক্ষণ ও পর্যবেক্ষন করতে পারবেন সেই সাথে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন বলে ব্যাট কর্মকর্তা জানায়। মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডের মল্লিক টাওয়ারে বিফ হোটেল সম্পর্কে শাহআলী কর অঞ্চলের রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে কর ফাঁকির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি দুর্নীতির সন্ধানকে বলেন, এবছরের জানুয়ারির ২৭ তারিখে বিফ হোটেলকে ভ্যাট নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। তিনি জানায় বিফ হোটেল ভ্যাট দিয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার টাকা তাদের বিক্রির তুলনায় বিশাল অঙ্কের ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বলে ধারনা করা হয়।
বিপ হোটেলে ১৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৫৮,৯৪,৫৩৪ টাকার। ৫শতাংশ হারে এতে ভ্যাট আসে ৯৪,৭২৬ টাকা। ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৩৯,৭৮,৭৬৭ টাকা। এতে ভ্যাট আসে ১,৯৮,৯৩৮ টাকা এই টাকার পুরোটাই ফাঁকি দিয়েছেন বলে জানায়। এই সময়ে ভ্যাট ফাঁকি মোট ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৬৪ টাকা। এছাড়াও হোল্ডিং ট্যাক্সও ফাঁকি রয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫ মার্চ পযর্ন্ত মোট ভ্যাট ফাঁকির পরিমান ৫লাখ ২০হাজার টাকা। এই টাকা আদায়ে মামলা করেছে সংশ্লিষ্ট রাজস্ব অফিস।
ডানে বীফ হোটেলের মালিক সাজ্জাদ ও বায়ে ম্যানেজার ।
বীফ হোটেলের ভাড়ার চুক্তিপত্রে এককালীন অগ্রীম টাকার কোনো উল্লেখ নেই। পজিশন অনুযায়ী দোকান ভাড়া কমপক্ষে দেড় লাখ টাকা হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে ভাড়া মাত্র ৭৫ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। এখানে পুরো হোল্ডিং ট্যাক্স ফাঁকি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুশিল সমাজের অভিমত কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের সুবিধা নিয়ে দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং দোকান মালিকরা কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। যে কারনে জাতীয় রাজস্ব বাজেট বিঘ্নিত হচ্ছে এবং অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হচ্ছে।
মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট প্রদান সহজি করনের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কেন্দ্রীয় নিবন্ধন নীতি চালু করেছিল। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা এটাকে কর ফাঁকির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
খলিল হোটেলের কাচা রশিদ
Leave a Reply