তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন নিয়ে মতবিনিময় থেকে সরে দাঁড়াল ডব্লিউএইচও ও তামাকবিরোধী সংগঠনও

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বিষয়ক সভায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার এনবিআর-এর সম্মেলন কক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে এনবিআরের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে স্পষ্ট জানানো হয়— “আয়োজিতব্য মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়।”

এ সভায় আমন্ত্রিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং তিনটি তামাকবিরোধী সংগঠনও অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থান

চিঠিতে বলা হয়, তামাক চাষ, উৎপাদন ও বিপণনের সাথে জড়িত দেশীয় ও বহুজাতিক কোম্পানিকে মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রণ জানানো “উদ্বেগজনক ও অনভিপ্রেত।এতে উল্লেখ করা হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশ্য হলো তামাকজনিত রোগ ও মৃত্যু হ্রাস করা,জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন ও দেশকে তামাকমুক্ত করা।অপরদিকে তামাক কোম্পানির লক্ষ্য কেবল মুনাফা অর্জন এবং তরুণ প্রজন্মকে তামাক সেবনে প্রলুব্ধ করা।সুতরাং,সরকারের স্বাস্থ্য নীতি ও তামাক কোম্পানির স্বার্থ সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী।চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি (Framework Convention on Tobacco Control) চুক্তির স্বাক্ষরকারী ও অনুসমর্থনকারী দেশ। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের পক্ষ থেকে তামাক কোম্পানির সাথে সরাসরি যোগাযোগ এফসিটিসি’র পরিপন্থী। তাই এনবিআরকেও ভবিষ্যতে এ ধরনের সভা আয়োজন না করার অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আইন সংশোধনের প্রেক্ষাপট

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া প্রণয়ন করেছে। এই খসড়া নিয়ে আলোচনা করতেই এনবিআর সভার আয়োজন করে। একই দিনে এনবিআর তামাক কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথেও পৃথক একটি বৈঠকের উদ্যোগ নিলেও পরে তারিখ পরিবর্তন করে আগামী ৮অক্টোবর নির্ধারণ করেছে।

তামাকবিরোধী জোটের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন,
তামাক উৎপাদন ও বিপণনকারী কোনো কোম্পানি সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টার স্টেকহোল্ডার হতে পারে না। আইনটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রণীত এবং তারা এটিকে শক্তিশালী করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এনবিআর-এর এই উদ্যোগ কতটা যৌক্তিক বা তাদের এখতিয়ারভুক্ত কিনা—তা ভেবে দেখার বিষয়।”