নিজস্ব প্রতিবেদক:
ডেমরা মাতুয়াইল ভূমি অফিস ঘুষ ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ইউনিয়ন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আলী নূর হোসেনের ঘুষ ছাড়া কোন কাজই সম্পন্ন হয় না।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, অফিসে সরকারী কর্মচারী মাত্র পাঁচজন হলেও প্রায় দেড় ডজন অস্থায়ী ‘উমেদার’নামধারী দালাল প্রতিদিন অফিসে বসে থাকে। এই দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই সব অবৈধ লেনদেন সম্পন্ন হয়। নাগরিকরা জানাচ্ছেন, সরাসরি অফিসে গিয়ে সেবা পাওয়া প্রায় অসম্ভব—দালালদের মাধ্যমেই বাড়তি টাকা দিয়ে কাজ করাতে হয়। অন্যথায় নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করা হয়।
এছাড়া জানা গেছে উক্ত ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে আলী নুর দায়িত্ব পালন করলেও সামপ্রতিক সময়ে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা এসোসিয়েশনের মহা সচিব জনাব আসাদুজ্জামান। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর আলী নুরের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেপরোয়া ভাবে অপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সেবা পেতে ঘুষ বাধ্যতামূলক নামজারী (মিউটেশন) আবেদন, খাজনা আদায়, খতিয়ান/পরচা উত্তোলন সহ নিয়মিত সেবা পেতে অবৈধ্য লেনদেন করতে বাধ্য হতে হয়।
অভিযোগ অনুযায়ী, এসব কাজে সরকারি নিয়মনীতি না মেনে বাড়তি টাকা না দিলে কোন ফাইলই নড়ে না।নামজারীর তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নামেও নেওয়া হয় মোটা অংকের ঘুষ। এমনকি টাকা দেওয়ার পরও অনেক সময় সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
পড়ছেন।
দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বাইরে যারা বছরের পর বছর কাজ করছে, তাদের আয়ের একমাত্র উৎস হচ্ছে অবৈধ ঘুষের টাকা। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, দালালদের মাধ্যমে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আলী নূর হোসেন। সুত্রে জানা গেছে ভূমি কর্মকর্তাদের পিছনের কক্ষের একটা রুমে ঘুষের টাকা লেনদেন করা হয়, উক্ত রুমে চেয়ার টেবিল বসিয়ে উমেদার নামধারী দালালদের বসার জায়গা করা হয়েছে। উক্ত রুমে উমেদার পরিচয়ে দালালদের প্রয়োজনে একটি কম্পিউটার বসানো রয়েছে, যেখানে চুক্তিকৃত ফাইলের কাজ করানো হয়।
একজন ভুক্তভোগী বলেন, অফিসে সরাসরি গেলে কাজ হয় না, উল্টো নানা অজুহাতে হয়রানি করে। দালাল ছাড়া কোন কাগজ এগোয় না। টাকা না দিলে বছরের পর বছর ফাইল আটকে থাকে।
জরুরি ব্যবস্থার দাবি
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা মনে করছেন, এই অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। অন্যথায় সাধারণ মানুষ ভূমি অফিস থেকে ন্যায্য সেবা কখনোই পাবে না।
Leave a Reply