নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) অনুযায়ী গণপরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ হলেও বাস্তবে তা কার্যকরভাবে মানা হচ্ছে না। এর ফলে যাত্রীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। এ অবস্থায় গণপরিবহনে ধূমপান বন্ধ, আইন শক্তিশালীকরণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির দাবিতে আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিকেল ৫টায় রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, ডাস্ ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে লিফলেট ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন,গণপরিবহনে ধূমপান করলে চালক ও যাত্রী উভয়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক জরিমানা করা জরুরি। টার্মিনাল ও চেকপোস্টে নিয়মিত নজরদারি বাড়াতে হবে। প্রতিটি যানবাহনে তামাকমুক্ত সাইনবোর্ড বাধ্যতামূলকভাবে টানাতে হবে।পরিবহন লাইসেন্স নবায়নের শর্তে তামাকমুক্ত নীতি অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে।
বক্তাদের মতামত
লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন—
ডাস্-এর টীমলিড আমিনুল ইসলাম বকুল, কর্মসূচী সমন্বয়কারী মোয়াজ্জেম হোসেন টিপু, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান, বিএনটিটিপি’র প্রকল্প পরিচালক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব, নাটাব-এর প্রকল্প কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা রুশিসহ তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি।
তারা বলেন,বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট ও রেলস্টেশনগুলোতে সিগারেট কোম্পানির নানা ধরণের অবৈধ প্রচারণা চলছে। খুচরা শলাকা বিক্রি, দোকানে দৃষ্টিনন্দন প্যাকেট সাজানো, ছাড়ে বিক্রি বা নতুন ব্র্যান্ড সরবরাহ, এমনকি ক্যালেন্ডার-ঘড়ি-লাইটার উপহার দিয়ে পরোক্ষ বিজ্ঞাপন চালানো হচ্ছে। এগুলো কিশোর-তরুণদের সহজেই আকৃষ্ট করছে।
আইন প্রয়োগে দুর্বলতা
লঞ্চ টার্মিনালে ধূমপান নিষিদ্ধ থাকলেও পর্যাপ্ত নজরদারি নেই।চালক ধূমপান করলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে।যাত্রীরা ধূমপান করলে পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।সড়ক পরিবহনে কঠোর নজরদারি ও সিসিটিভি ব্যবহার কার্যকর হতে পারে।
বাংলাদেশে গণপরিবহনে ধূমপান আইনত নিষিদ্ধ হলেও কার্যকর নজরদারি নেই।সিগারেট কোম্পানিগুলো পরোক্ষ বিজ্ঞাপন চালিয়ে যাচ্ছে।লিফলেট ক্যাম্পেইনে আইন শক্তিশালীকরণের আহ্বান জানানো হয়।
আইন থাকলেও তা প্রয়োগ না করলে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তা অর্থহীন।গণপরিবহন ব্যবস্থায় তামাকমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।তরুণদের প্রলোভন থেকে বাঁচাতে সিগারেট কোম্পানির প্রচারণা বন্ধ করা জরুরি।
টার্মিনাল ও যানবাহনে জিরো টলারেন্স নীতি চালু করতে হবে।লাইসেন্স নবায়ন ও অনুমোদনের শর্তে তামাকমুক্ত নীতি কঠোরভাবে মানতে হবে।দোকানে খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে।পরিবহন মালিক-চালক-যাত্রী সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে গণমাধ্যম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা প্রয়োজন।
পরিশেষে
লিফলেট ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বক্তারা বলেন, সরকার, পরিবহন মালিক, চালক, যাত্রী এবং সমাজের সকল স্তরের সমন্বিত প্রচেষ্টা থাকলেই স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও তামাকমুক্ত গণপরিবহন নিশ্চিত করা সম্ভব।
Leave a Reply