নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষায় এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অবিলম্বে সংশোধনের দাবি জানিয়ে ঢাকায় এক মানববন্ধন ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এই কর্মসূচির আয়োজন করে আর্থ ডেভলপমেন্ট ফাউণ্ডেশন (EDF), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান আর্থ ক্লাব, এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা)।
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরও শক্তিশালী করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো এবং জনমত তৈরি করা, যাতে তামাক কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে সরকারের নীতিনির্ধারণে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর এ এফ এম সরোয়ার, সাবেক উপাধ্যক্ষ, বাংলাদেশ ডেন্টাল কলেজ এবং রিসার্চ অ্যাডভাইজর, সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স (CLPA)।
সঞ্চালনা করেন ফাইয়ায আনাম স্বনন, ইয়ুথ অফিসার, EDF এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
প্রধান বক্তাদের বক্তব্য মোঃ সুজন হোসেন, সভাপতি, সমাজবিজ্ঞান আর্থ ক্লাব, বলেন — “তামাক পণ্যগুলোকে ফ্যাশন ও আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করে তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি।”
সামি সাঈদ,শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, উল্লেখ করেন তামাক কোম্পানিগুলো মিথ্যা পরিসংখ্যান ও ভ্রান্ত প্রচারণার মাধ্যমে নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করছে।
ফারহানা জামান লিজা,প্রকল্প সমন্বয়ক,টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,বলেন তামাকের কারণে দেশে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে; জনস্বাস্থ্য রক্ষায় আইন আরও কঠোর করতে হবে।”
উম্মে জান্নাত কনী, প্রকল্প সমন্বয়ক, মানস, বলেন — “ডিজিটাল মাধ্যমে সিগারেট সেবনকে তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তুলছে তামাক কোম্পানিগুলো; এটি বন্ধ করা জরুরি।”
আমিনুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, EDF, বলেন — “তামাক কোম্পানির তথাকথিত করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (CSR) কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণদের প্রভাবিত করা হচ্ছে, যা মূলত বিপণনের কৌশল।”
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর এ এফ এম সরোয়ার বলেন,তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে যুগোপযোগী ও শক্তিশালী করা ছাড়া তরুণ সমাজকে তামাকের কবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। এখনই সরকারকে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।”
মানববন্ধনের মূল দাবি
মানববন্ধনে বক্তারা দাবি জানান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধন ও কার্যকর বাস্তবায়ন করতে হবে।
তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত নীতিনির্ধারণ নিশ্চিত করতে হবে।তরুণ প্রজন্মকে সুরক্ষায় তামাক বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
কর্মসূচিতে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা), EDF, WBB ট্রাস্ট, DAS, CLPA, ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চ, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি, এবং মানসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা।
আয়োজকরা বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় আইন সংস্কার এখন সময়ের দাবি। তামাক কোম্পানির স্বার্থ নয়, বরং জনগণের স্বাস্থ্যের দিকেই সরকারের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
Leave a Reply