বিশেষ প্রতিবেদকঃ এসএম উজ্জ্বল হোসেনঃ যশোর জেলার কোতোয়ালি থানাধীন মনোহরপুরস্ত
মেসার্স সিদ্দিক বিশ্বাস ফিলিং স্টেশনের মালিক জহির হাসানের প্রতারনায় নিঃস্ব ইয়োলো পরিবহনের মালিক নাজমুল করিম তুহিন।
সুত্রে জানাযায় জহির হাসান, পিতা গোলাম সিদ্দিক, মাতা রিজিয়া খাতুন, সাং-২৩/এ,হযরত বোরহান শাহ্ সড়ক,যশোর।
সময়টা ২০১৩ জহির হাসানের ব্যাক্তিগত সমস্যার কারনে অর্থ প্রয়োজন হওয়ায় মনোহরপুর ও সুইর ডাঙ্গাস্থিত দুটি মৌজার ১৩১ শতক জমি যার ওপর নির্মিত একতলা বিশিষ্ট মেসার্স সিদ্দিক বিশ্বাস ফিলিং স্টেশন ও খাবার হোটেল সহ পার্শবর্তী খালী জায়গা বিক্রয়ের মনস্থির করলে তারই পরিচিত ব্যাংক কর্মকর্তা জনাব সাঈদুল ইসলামকে অবগত করেন। সাঈদুল ইসলাম ইয়োলো লাইন পরিবহনের মালিক নাজমুল করিম তুহিনের কাছে বিক্রয় প্রস্তাব করেন। গাড়ির ব্যাবসা থাকায় প্রস্তাবিত পেট্রোল পাম্পটি নাজমুল করিম ক্রয়ের সম্মতি জানায়।
পেট্রোল পাম্প মালিক জহির হাসান উক্ত সম্পত্তি ট্রাস্ট ব্যাংকে মডগেজ রয়েছে বিষয়টি গোপন রেখে জমি ও পাম্পের মূল্য ৫ কোটি টাকা প্রস্তাব করে। নাজমুল করিম সম্মতি জানিয়ে হাত বায়না সরুপ ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করে।পর্যায়ক্রমে ২৪/০১/২০১৪ তারিখের পূর্বেই দুই কোটি টাকা নগদ প্রদান করে যার সকল ডকুমেন্টস রয়েছে। বিক্রেতা জনাব জহির হাসান বাংলাদেশ সরকারের নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প নং-কখ-৮৩১১৪৭৮,৮৩১১৪৭১,৮৩১১৪৮০ মুলে একটি বায়না পত্র তৈরি করে যাহাতে উল্লেখ রয়েছে ৬ মাসের সময় সিমা এবং নির্ধারিত মূল্যের ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত দাম উল্লেখ করে ৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বায়নাপত্র তৈরি করেন যাহা ক্রেতা পক্ষ অবগত ছিলেন না।অতঃপর ক্রেতাকে বোঝানো হয় বেশি টাকা উল্লেখ করায় ব্যাংক লোন পেতে সুবিধা হবে। উক্ত সম্পত্তি ট্রাস্ট ব্যাংকের লোন পরিশোধ ক্রমে মডগেজ রিলিজ করে সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি দিবেন মর্মে অঙ্গীকার করেন। বিক্রেতা জহির হাসান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মডগেজ রিলিজ করতে ব্যর্থ হয় এবং বায়নাপত্রের মেয়াদ অতিক্রম করে। বায়না পত্রে উল্লেখিত টাকার পরেও বিভিন্ন উপায়ে নাজমুল করিমের ব্যবহৃত টাটা ১৬ মডেলের একটি প্রাইভেট কার যার মূল্য ১৩ লক্ষ টাকা সহ আরো ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা গ্রহন করে যার প্রমান পত্র রয়েছে।
জমির মূল্যের অধিকাংশ অর্থ গ্রহণ করা সত্বেও বায়নার মেয়াদ শেষ দেখিয়ে সাব-কবলা রেজিস্ট্রি দিতে গড়িমসি শুরু করে এবং ক্রেতা নাজমুল করিমের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে।পূর্বের প্রদেয় অর্থ আত্মসাৎ করার লক্ষে ২০/০৭/২০১৫ইং তারিখ একটি ভূয়া বায়নাপত্র তৈরি করে যার দাতাঃ জহির হাসান ও বিলকিস পারভীন উভয় স্বামী-স্ত্রী।স্ট্যাম্প নং-৪৮০০৭০৩,৪৮০০৭০৪,৪৮০০৭০৫ দলিল মূলে পূনরায় চুক্তি সম্পাদিত করে যেখানে স্বাক্ষীদয়ের নাম রয়েছে (১)মোঃ রাজিবুল করিম শামিম,পিতা-আলী আজগর,বাসা নং ১২/বি,ইস্টার্ন হাউজিং, কল্যাণপুর,ঢাকা। (২)মোঃসহিদ সুলতান পিতা মৃত জয়নাল আবেদীন,বাসা-সলিমপুর,কতোয়ালী,যশোর (৩)মোঃ জাহিদুল ইসলাম,পিতাঃআনছার আলী,সাং মনোহরপুর,যশোর।উক্ত বায়নাপত্র এ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম কর্তৃক নোটারীপাবলিক করা হয় তাং২০/০৭/২০১৫।
খোঁজ নিয়ে স্বাক্ষীদয়ের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।দলিল গ্রহিতার স্বাক্ষর জাল করা সেই সাথে স্বাক্ষীদয়ের স্বাক্ষর একই ব্যাক্তির হাতের লেখা বলে ধারনা করা হয়।জাল জালিয়াতি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে পূর্বের প্রদেয় অর্থ আত্মসাত করার লক্ষে ধুর্তবাজ জহির হাসান নানা ভাবে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সুত্রে জানাযায় ২০১৩/১৪ সালে জহির হাসান বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ক্রিমিনাল এক্টে একাধিক মামলায় পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন গ্রহিতা নাজমুল করিমের ঢাকার বাসায়। জহির হাসান তার নিজ অসুস্থতার চিকিৎসা করাতে ব্যর্থ হয়,অতঃপর নাজমুল করিম মানবিক মানুষের পরিচয় দিয়ে তাকে ইন্ডিয়ার চেন্নাই সহ চায়নাতে নিয়ে চিকিৎসা করান। তার একমাত্র ছেলের স্কুল পড়াশোনা বন্ধের পথে থাকায় টাকা পয়সা দিয়ে পোড়াশোনা নিয়মিত রেখেছেন নাজমুল করিম।এতো কিছুর পরেও লোভি অকৃতজ্ঞ জহির হাসান একের পর এক অপরাধ করে চলেছেন।
অনন্যের জমি নিজের করে নেওয়ার জন্য রয়েছে তার একটি বিশেষ বাহিনী। তাদের সহযোগিতায় আশপাশের নিরীহ জমি মালিকদের সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে জহির হাসানের বিরুদ্ধে।পার্সবর্তী আবুল কাশেম ও ইয়াকুব আলীর ১৫ শতক জমি সহ নিজ ও স্ত্রীর নামে থাকা ২১টি বিভিন্ন দাগ খতিয়ানের এক শতক,দেড় শতক করে মোট ৩৮ শতক জমি সুকৌশলে নাজমুল করিমের নামে সাব-কবলা রেজিস্ট্রি করে দেয় যার কিছুই জানতেন না দলিল গ্রহিতা নাজমুল করিম। তাকে জানায় এই দলিল দিয়ে লোন করার জন্য কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন খন্ডের জমির ওপর লোন দিতে অস্বীকার করে।পূনরায় উক্ত জমি নিজেরাই ফিরিয়ে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেয় যা জাদুরকাঠি।
অনুসন্ধানে জানাযায় ২০১৪ সালের শেষের দিকে নাজমুল করিমের কল্যাণপুরস্থ ইয়োলো লাইন পরিবহনের কাউন্টার সহ অফিস ভাঙচুর ও লুটপাট হয়,যার নেপথ্যে রয়েছে জহির হাসানের পোষ্যবাহনী,উদ্দেশ্য প্রমান লোপাট করা।উক্ত বিষয়ে দারুসসালাম থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়। জহির হাসানের সকল পরিকল্পনা ব্যার্থ হয় সকল তথ্য প্রমান নাজমুল করিমের নিকট অবশিষ্ট রয়ে যায়।নাজমুল করিম তার পাওনাকৃত অর্থ নিজে এবং বিভিন্ন উপায়ে চাইতে গেলে টাকা দিবেনা মর্মে হুমকি ধামকি মামলার ভয় দেখানো হয়।এমনকি ভূয়া বায়না পত্রের ১নং স্বাক্ষী রাজিবুল ইসলাম শামীমকে দিয়ে চুরি করানো চেক মামলা দিয়ে নাজমুল করিমকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।একই সাথে চুরি হওয়া ইসলামী ব্যাংক শাখার দুটি চেক যার নং-IBQ-3210027, ৩১/০৮/২০১৫ইং তারিখে ২,৪৭,০০০০০/দুই কোটি সাতচল্লিশ লাখ টাকার অংক বসানো হয়।অপরটি IBQ-3210028,৩০/১১/২০১৫ইং তারিখ ৫,০০০০০০০/=পাঁচ কোটি টাকার অংক বসানো হয়।ক্রেতা নাজমুল করিমের সাথে বিক্রেতা জহির হাসানের কোনো যোগাযোগই ছিলোনা অথচ তার স্বাক্ষর উক্ত বায়নাপত্রে দৃশ্যমান যা নাজমুল করিমের স্বাক্ষর নয় বলে গ্রহিতা অস্বীকার করে।
প্রশ্ন থাকতে পারে ২০১৩ সালের প্রস্তাবিত সম্পত্তি বিক্রয়ের নিমিত্তে যে অর্থ গ্রহন ও ২৪/০১/২০১৪ইং তারিখের বায়নাপত্রের কি কোনো মুল্য নেই? যদি তাই হয় দুই বছর পর কি করে গ্রহীতার অনুপস্থিতিতে তৈরিকৃত বায়নাপত্রের কি মূল্য আছে? জমি ক্রয় বিক্রয় জাল জালিয়াতী অর্থ আত্মসাৎ সমস্যা নিরসনের জন্য গত ৩১/০৩/২০২৪ই তারিখ যশোর সদর থানাধীয় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয় যার নং-১৯১৪। স্থানীয় গণ্যমান্য বেক্তিদের সমন্বয়ে ১৭/০৪/২০২৪ ইং তারিখ মনোহরপুরস্থ মেসার্স সিদ্দিক বিশ্বাস ফিলিং স্টেশনে জনাব জহির হাসানের সাথে একটি বৈঠক হয়,তিনি সবার সম্মুখে জানায় গ্রহিতা জনাব নাজমুল করিমকে নিয়ে আলোচনা ক্রমে সমস্যার নিষ্পত্তি করবেন। অতঃপর ১৮/০৪/২০২৪ ইং তারিখ জিডির ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের সমন্বয়ে সমস্যা নিরসনে দিনধার্য করা হয়। জিডির তদন্ত অফিসার এসআই কামরুজ্জামানের সহিত বিবাদীর যোগসাজশ থাকায় ধূর্তবাজ জহির হাসান নিজে উপস্থিত না হয়ে তার ছেলে এবং মেয়ের জামাই পরিচয়ে মাগুরার শ্রীপুর থানায় কর্মরত ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ জনাব তাসনিম মিয়াকে প্রতিনিধি নিয়োগ করেন।তাসনিম মিয়া তার পরিচয় গোপন করে উক্ত বৈঠকে জালজালিয়াতির পক্ষে অবস্থান নেয়।এবং ভিকটিমকে হুমকি স্বরুপ টাকা আদায়ে আইনের আশ্রয় নিতে বলেন। সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ও তদন্ত অফিসার তথ্য প্রমান উপস্থিতিদের কথাবার্তায় বুঝতে পারেন আসল ঘটনা এবং অভিযুক্ত জহির হাসানকে স্বশরীরে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানায়। অতঃপর বিবাদীর পক্ষে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা তাসনিম জানায় জহির হাসান চিকিৎসা করাতে ভারত গেছেন তিনি আসলে দেখা করবেন।
নানা ধরনের চালাকি ধর্তবাজ প্রতারক অর্থ আত্মসাতকারী জহির হাসানের অপরাধে বহু মানুষ নিঃস্ব।ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর দাবি জহির হাসানের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি।
Leave a Reply